প্রথম বর্ষ, শারদ সংখ্যা, ১২ অক্টোবর' ২০১৫

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

কবিতা






জয়া রায়
               কোলকাতা




বিদ্যুৎ

চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে,
মাঝেমাঝে বিদ্যুত্ঝলক ,
সাথে বুক কাঁপানো গুরুগম্ভীর আওয়াজ ।
হলঘরের মাঝে, একটি টেবিলকে ঘিরে আমরা তিনজন,
অমল আমি আর পরিমল।
হাওয়ার দাপটে মোমবাতি গেছে নিভে,
কারেন্টের দেখা নেই সেই বিকাল থেকে,
ভৌতিক পরিবেশের নিকষ কালো অন্ধকারে,
বিদ্যুতের ঝলকানি আসছিলো মাঝেসাঝে ।
শুরু হল আজকে ,জীবনের চমকদার ঘটনার কথা,
সবার ছোট ,তাই অমলকে বলতে দিলাম আমরা।
গলার স্বর থমথমে,চোখের কোনে জল,
অমলের কাহিনী অসফল ভালবাসা আর বেদনার ফল।
নাম ছিল করুণা ,অমলেরই দূর আত্মীয়া,
ভালবেসেছিলো তাকে, থাকতো অমলেরই বাড়ীর কাছে।
অনেকদিন ঘুরে, শেষে বিয়ের দিন ও ঠিক করে,
বিয়ের আগের রাতে ,করুণা পালায় নিরুদ্দেশের পথে,
আজ ও অমল অপেক্ষা করে আছে,
জানতে হবে ,করুণা ঠকাল কেন তাকে??
পরের বক্তা পরিমল, জীবনটা সাদামাটা ,
নেই কোনও বৈচিত্র্যময় আড়ম্বর ।
ভালবাসা ,তার জীবনের পথ মাড়ায়নি এ যাবৎ,
কুমার পরিমল ,আজকের সমাজে তাই অচল।
মাঝেসাঝে সোঁসোঁ শব্দে হাওয়া, সবার চুপ করে থাকা
অনুমতি নিয়ে ,এবার তবে আমার পালা।
বৃষ্টিবহুল এক রাতে,ফিরছিলাম অফিস থেকে,
হঠাৎ যেন বাইকের চাকা ঠেকলো কিসে??,
গাড়ির আলোয় দেখি, রাস্তায় এক মহিলা শুয়ে।
আলুথালু বেশ ,দুচোখে আতঙ্কের রেশ,
আমায় দেখে কঁকিয়ে ওঠে সে,
বাঁচান আমায়, ওই মুখোশধারী পশুর থেকে।
ভালবাসা অভিনয় আর বিয়ের কথা দিয়ে,
বলাৎকার করার পর খুনের চেষ্টা করে।
অনেক কষ্টে পালিয়েছি আমি ,আজ আপনার পায়ে
একটু জায়গা দিয়ে আমায় ,বাঁচতে দিন নারীর সম্মান বাঁচিয়ে।
সেই রাত থেকে আজ ও আছি মেয়েটির পাশে আমি,
অমল দাঁড়াও তোমাকে একটু চা খাওয়াতে বলি।
আলো এলো ,চায়ের পেয়ালা হাতে করুণা ঢুকলো ঘরে,
অমলের মুখটা সাথে সাথেই ফ্যাকাসে হয়ে ওঠে।
বিড়বিড় করে বলে ওঠে অমল ,একি কাণ্ড দেখি??
করুণা তুমি আজ ও আছো বেঁচে ,এও কি সম্ভব নাকি?
আজ বুঝলাম আমার লোকেরা তবে বলেছিল ডাহা মিথ্যে?
খুন করে গুম করেছে তোমায় মাটিতে পুঁতে।
আড়ালে ছিল পুলিশের দল নিয়ে যায় অমলকে,
ধন্য আমি, স্বামী হয়ে আজ বউকে দিলাম,
জীবনের সেরা উপহারের ডালি যে,
নারীর জায়গা সবার উপরে,
আদি অনন্তকালের চরম সত্য সকল দেশে সকল মাঝে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন