প্রথম বর্ষ, শারদ সংখ্যা, ১২ অক্টোবর' ২০১৫

শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

মতামত

পত্রিকার পাঠক-পাঠিকা, সংখ্যার বিচারে বেড়েছে । প্রথম সংখ্যাতেই আন্তরিক আবেদন রেখেছিলাম সমস্ত পাঠ-পাঠিকাদের কাছে যে, কেমন লাগছে 'ইচ্ছে ডানা' পত্রিকা, তা নিয়মিত জানাতে। ভাল খারাপের দিকগুলো তাতে আরও স্পষ্ট হতো আমাদের কাছে । কিন্তু আশানুরূপ সারা পাওয়া যায়নি । তবে ঝনঝন শব্দে আশা একেবারে ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে নি । কেউ কেউ আমাদের সাথে আছেন, আশা করি ভবিষ্যতে এই সাথে থাকার ইচ্ছের আরও প্রকাশ দেখতে পাওয়া যাবে ।
এমাসের মতামত-------
অরুণিমা চৌধুরী    কোলকাতা

উড়ে চলুক ইচ্ছেডানা,ইচ্ছেমত দূর আকাশে,
যাক না ভেসে সুর্যি এসে সাগরতীরে  যেথায় মেশে।
রামধনু রঙ মাখিয়ে নিয়ে পেখম মেলে
রূপ সাগরে পাল তুলে সে যাক না চলে
অনেকদূরে,তেপান্তরে
যেথা ব্যঙ্গমা আর ব্যঙ্গমীরা গল্প শোনায় পাতাল পুরের।
যেথা লক্ষ হীরার মানিক জ্বলে সাপের মাথায়
যেথা লক্ষ্মীমণি রাজকুমারী বন্দি থাকে সোনার খাঁচায়।
সেই সে দেশে অচিনপুরে যাও গো উড়ে ইচ্ছেডানা
ডানায় ডানায় দিক রে উড়ান একচিলতে ইচ্ছেখানা ।


ইচ্ছে ডানার প্রতি আমার আন্তরিক শুভ কামনা রইলো ।

সৌরভ মূখার্জী   ব্যান্ডেল


জন্মের ভিতর থেকে জন্মাবার সাধ, সেই সাধ থেকে বাইরে বেরিয়ে ইচ্ছে ডানা ইচ্ছে মতো ডানা মেলছে বাংলা কাব্য ও সাহিত্যের উন্মুক্ত আকাশে । কামনা করি কাব্য সাহিত্যের গগনে ইচ্ছে ডানা রেখে যাক চিরস্থায়ী সোনালী ছাপ । শুভেচ্ছা রইল ।

   ‘হেডোনিজম’ ফ্যামিলি বিউটি সেলুন এবং স্পা
           দমদম রোড, ৩ নং হরকালী কলোনি, কোলকাতা- ৭৪
                             ( ইন্দিরা ময়দানের নিকট )
                  মোবাইলঃ৯৯০৩০৮৫৫৭০ / ৯৮৭৪৪৭২২৪১

ইচ্ছের ভ্রমণ

কুমকুম ঘোষ
কোলকাতা
পঞ্চলিঙ্গেশ্বর--
              প্রকৃতি ভক্তি মিলেমিশে একাকার
         রুক্ষ পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসছে জলস্রোত আর সেখানে সারাবছর চুপ করে ডুব  দিয়ে থাকেন স্বয়ং শিবএকটি দুটি নয় পাঁচটি শিবলিঙ্গ একসাথে অবস্থান করছে যুগ যুগ ধরে এবং এ জন্যই এই জায়গার  নাম পঞ্চলিঙ্গেশ্বর । উন্মুক্ত আকাশের নীচে মন্দির । স্থাপত্য বলতে এর প্রাকৃতিক অবস্থান। পাথরের গা বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণাধারা। চারপাশের জঙ্গল আর ভক্তের হৃদয় । দেবতা এখানে মন্দিরের চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দী নন । তাঁকে দেখাও যায় না । স্পর্শ  করতে হয় পাথরের ওপর সটান শুয়ে পরে এক অভিনব তীর্থক্ষেত্র—পঞ্চলিঙ্গেশ্বর । উড়িষ্যার বালাশোর জেলায় নীলগিরি  পাহাড়ের একটি টিলার ওপরে এক হিন্দু তীর্থক্ষেত্র । তবে শুধু ধর্মীয় আবেগ নয় প্রাকৃতিক শোভায় মন কেড়ে নেওয়ার মত স্পট এটি । 
বাংরিপসি থেকে বারিপদার রাস্তা 
       বাংরিপোসি থেকে ভোর ছ’টার একটু পরে বেরিয়ে সাড়ে সাতটা নাগাদ  বারিপদা শহরের মূল কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আমরা সবাই গলা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম । লিকার চায়ের স্বাদটা অন্যরকম । দোকানীকে জিজ্ঞেস করতে বললেন চিনি ও গোলমরিচ দেওয়া । অপ্রস্তুত বাঙালী রসনা তার স্বাদ ঠিক গ্রহণ করতে পারছিল না । ফেলেও দিতে পারছিনা । খেয়েই নিলাম ।  ময়ুরভঞ্জ জেলার  বারিপদাকে দ্বিতীয় শ্রীক্ষেত্র (পুরি) বলা হয় । পুরীর পর  সবচেয়ে বড় রথযাত্রা এখানেই হয় ।  সেখানেই স্থানীয় লোকদের থেকে জেনে নিলাম কোন দিকে যাবো । একটু এগিয়ে তিনটে রাস্তা । একটা গেছে কলকাতার দিকে,একটি ভুবনেশ্বরের দিকে আর মাঝের টি বালাশোরের দিকে । আমরা সেটাই ধরলাম । এই রাস্তা দিয়ে চাঁদিপুর কে পাশ কাটিয়ে সোজা পঞ্চলিঙ্গেশ্বর । ট্রেনে হাওড়া থেকে বালাশোর ষ্টেশনে নেমে এখানে আসার সহজ পথ ও আছে । 
ওটিডিসীর হোটেল পান্থশালা
         ওটিডিসির হোটেল পান্থশালায় পা দেবার সাথে সাথে আবার বৃষ্টি শুরু। বুকিং না থাকলেও ঘর পেতে অসুবিধা হলো না। হোটেলের জানলা থেকে দেখছি নীলগিরি পাহাড়টা যেন সেই ধারাস্নানে ধুয়ে নিচ্ছে সময়ের ধুলো । পঞ্চলিঙ্গেশরকে জড়িয়ে আছে প্রাচীন কাহিনী । কথিত আছে রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতা দেবী নির্বাসনে থাকার সময় এখানে শিবের আরাধনা করতেন আরএকটি কাহিনী এই যে রাজা বানাশূর স্বয়ম্ভূ শিবকে এখানেই পূজো দিতেন। কিন্তু সেই বৃষ্টির মধ্যে আর তখন দেবদর্শনে গেলাম না আমরা । ঠিক হলো পরদিন সকাল সকাল বেরিয়ে পরবো ।                                                                           
পরিচ্ছন্ন পান্থশালা ও দূরে নীলগিরি পাহাড় 
     পরদিন ও সকাল থেকেই মাঝারি বৃষ্টি পড়ছিল কিন্তু আমরা তার মধ্যেই যাবো কারণ সেদিন  আমাদের কলকাতা ফিরতেই হবে । ১ কিলোমিটার গিয়েই গাড়ির পথ শেষ । পারকিং এ গাড়ি রেখে আমরা পায়ে হেঁটে এগোলাম । দুপাশে অজস্র ছোট ছোট দোকান কিন্তু বন্ধ। বৃষ্টিও পরছে সমানতালে । একটা খোলা দোকানে দুজন দোকানী বসে আছে ।তারাই জানালো পূজারী বাম্ভ্রণ সেই বৃষ্টির মধ্যেও পৌঁছে  গেছেন মন্দিরে । তারা পূজা  দেবার উপাচার ও বিক্রি করেন । সেসব সংগ্রহ করে আরো এগিয়ে গেলাম । পাশ দিয়ে একটা ছোট  জলধারা ওপর থেকে নেমে আসছে প্রবল বেগে । পরে আবিষ্কার করলাম এটাই সেই জলস্রোত যেটির নীচে শিব অবগাহন করে আছেন পুরাণ থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত ।
ছবি সৌজন্যে
দেবাসিশ ঘোষ
  
      পাহাড়ের ধাপকে সুন্দর করে  কেটে তৈরি করা হয়েছে সিঁড়িগুলো । মোট ৩১১ টি মাঝে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা আছে  খানিকটা করে ওঠার পরেই  ।  যেখানে তখন কিছু গরু ও  ছাগল আশ্রয় নিয়েছে । এরা হয়ত কাছের কুলডিহা গ্রাম থেকেই এসেছে কারন এই টিলাটির অবস্থান ঐ গ্রামেই ।  অবশেষে মন্দির প্রাঙ্গনে পৌঁছলাম । প্রশস্ত চাতালে শিবের ত্রিশূল ও প্রতীকী শিবলিঙ্গ আছে । পূজো এখানে ই  দিতে হয় । চাতালের পাশেই সেই ঢালু পাথরটি যার খাঁজে শিব লুকিয়ে আছেন ।       
 নীলগিরি  পাহাড়ের মাথায়
মেঘ আটকে আছে 
এই রাস্তা গেছে মন্দিরের দিকে
     এখন ভরা বর্ষা তাই জলের স্রোত ও বেশী । শুনশান মন্দির । একজন বর্ষাতি গায়ে চাতালের জল ও খসে পরা পাতা সরিয়ে দিচ্ছে ।কয়েক ধাপ নেমে প্রাঙ্গনে এসে দাঁড়ালামপ্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ের  গা বেয়ে নেমে আসা জলস্রোতের আওয়াজ ছাপিয়ে ঘন্টার আওয়াজ ও পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ সৃষ্টি করেছে এক স্বর্গীয় পরিবেশ । পূজো দিয়ে এবার আমরা নামতে শুরু করলাম । দু একটা দোকান  খুলেছে । তার একটাতেই কিছুক্ষণ বসে গরম চা খেয়ে নেমে এলাম পান্থশালা । এবার ঘরে ফেরার পালা ।

ইচ্ছের রান্নাঘর







শ্যামলী পাল
                  দমভীলি, মহারাষ্ট্র



    




 সুজির ইডলি             


উপকরণ
সুজি, টক দই, নুন, চিনি, একটু খাওয়ার সোডা, হিং, কারি পাতা, সরষে, আর চাই গাজর,বিনস, বাধা কপি, কাঁচা লঙ্কা ।
প্রণালী

সুজিতে একটু খাওয়ার সোডা আর নুন      

মিলিয়ে টক দই দিয়ে মেখে এক ঘণ্টা 
রেখে দিন । সব তরকারি ভালো করে 
কুচিয়ে রাখুন । এবার কড়াই-এ তেল গরম করে সরষে, কুচানো কারিপাতা,হিং ফোড়ন দিয়ে, কুচানো লঙ্কা এবং কাঁচা সবজিগুলো দিয়ে দিন । এবার আন্দাজ মতো নুন চিনি দিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন একটু সময় ।তারপর রেডি তরকারি সুজির মিশ্রণ এ মধ্যে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ইডলি সাঁচে দিয়ে আঁচে বসিয়ে দিলেই রেডি আপনার সুজির ইডলি । নারকেল চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন ।চাটনি......

নারকেল কুরিয়ে নিয়ে একটু নুন, চিনি, লঙ্কা দিয়ে ভালো করে বেটে নিলেই রেডি ।




মুম্বাই বড়া পাউ


উপকরণ
আলু, কাঁচা লঙ্কা বাটা, রসুন বাটা, হিং, নুন, হলুদ, তেল, বেসন আর একটু খাওয়ার সোডা 
প্রণালী
বেসন-এ একটু নুন আর সোডা মিশিয়ে জল দিয়ে গুলে            

মিশ্রণ বানিয়ে নিন । এবার আলু সিদ্ধ করে রাখুন । তারপর কড়াই-এ তেল গরম করে রসুন লঙ্কা বাটা দিয়ে দিন ।একটু নাড়িয়ে সিদ্ধ করা আলু আন্দাজ মতো নুন হলুদ দিয়ে দিন । ভালো করে মিশিয়ে নিন। (দোকান এর মতো টেস্ট করতে হলে একটু বেশি ঝাল দিতে হবে। আর এই মশলা বেশি ভাজবেন না)  এবার আলু ঠাণ্ডা হলে গোল 
গোল বানিয়ে নিন । তারপর তেল গরম করে আলুর গোলা বেসন এ চুবিয়ে ভালো করে ভেজে নিলেই রেডি আপনার বড়া । এবার পাউ একটু কেটে  নিয়ে 
( পাউ রুটি ও নিতে পারেন ) লাল চাটনি কুঁচানো পিয়াজ আর বড়া দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন ।
চাটনি-- শুকনো নারকেল,একটু রসুন, শুকনো লঙ্কা আর নুন মিশিয়ে ভালো করে বেটে নিলেই রেডি লাল চাটনি ।
রান্না ঘরের নতুন টিপস
যে কোনো রান্না তে ফোঁড়ন দেবার সময় যদি সব থেকে প্রথমে গরম তেল এর উপর একটু সামান্য হলুদ ফেলে দিয়ে তারপর ফোঁড়ন দেওয়া হয় তাহলে রান্না ঘরে তেল বেশি উড়বে না । এতে রান্না ঘর একটু কম তেল চিট্ হবে ।

ঙ্কবিতা


    


তৈমুর খান
              রামপুরহাট, বীরভুম 





শ্রেণিকক্ষ

তবে তাচ্ছিল্যই হোক

ইচ্ছেরা বসেছে সারি সারি
শ্রেণীকক্ষ ভরে আছে অন্ধকার
আমাদের পদাবলী আমরাই গাই
রাজার হাতিরা চলে যাক রাজপুরে

কথিত নিষ্কাম কথা যতই উড়ুক
শ্রদ্ধাও এক চিলতে আশ্রয় দেবে না
নতুন জীবন পথে হলাহল বাঁশি
যে বাজায় বাজাক-
আমরা নিজের আরশি নিজের কাছে রাখি
রতিস্বাদ যদিও খরচ হয়
উন্মুখ পরকীয়া স্রোতে

চেয়ার টেবিল জুড়ে মোহন মোহিনী
শিক্ষা দেয় অনেক দুপুর রাত ক্লান্তিহীন
শ্রেণিকক্ষে ঘুম পায়, আলস্যে দুর্বার
স্বপ্ন জাগে, মৃত্যুও ঘুমায় এসে
শরীরে শরীরে...

কবিতা






জয়িতা দে সরকার
                            দূর্গাপুর, বর্ধমান




ত্রয়ী- একটি অলিন্দ
আটপৌরে নীল ডুরে শাড়ীটা রোজ-
শুকায় দখিন খোলা বারান্দায়!
ঝড়-ঝাপটা সামলায় অনায়াসে সে-
মধ্যবিত্ত জীবন যাপনের!
মনে রাখে সবজীওয়ালার চেনা ডাক-
ফুলওয়ালী মাসির বেসুরো সুর!
কাজের বৌ'এর কলরব সামলায় রোজ-
যেন চড়ুইদের চড়ুইভাতি!
আটপৌড়ে নীল ডুরে শাড়ীটা তবু-
স্বপ্ন দেখে আকাশ ছোঁয়ার!
বহুদিন চোখ দেখেনি বইয়ের পাতা-
নিয়ম মেনে সিদুঁর ছোঁয় নোয়া!
লক্ষ্মীবারের পাঁচালী সন্ধ্যাকাশে ভাসে-
নিখুঁত রামায়ণ পাঠ!
খাসা রাঁধুনী,সজাগ দৃষ্টি চারিদিক-
কলম ভুলেছে পথ!
আটপৌরে নীল ডুরে শাড়ীটার আজ-
বহুদিন পর অন্য আকাশ!
আপন আকাশ খাতা-কলমের সাথী-
বারান্দায় ঝোলে না সে আর! 
"যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম"...
ভেসে আসে মন্ত্রের সুর...
অন্ধকার ঘরে পড়ে আছে
এঁটো শরীরটা,
ঠিক যেন মর্গে পচছে দেহ-
বেওয়ারিশ লাস-কেউ খোঁজ রাখে নি!
একটা বিয়ে হয়েছিল অগ্নিসাক্ষী করে...
তারপর থেকে আগুনের ছেঁকা,
নিত্য দিন-শরীর এবং মনে!
ভালোবাসা-ভেসে গেছে,যেন খড়কুটো!
বহুবার ভাবে-উষ্ণতা দিয়ে জড়িয়ে রাখি এসো;
খুব কাছে এলে ঝড় শুনতে পায়,অন্য মোহিনী ঝড়! বিলাসিতা!
রাত বাড়ে,বাড়ে মাতাল!
তিক্ত ছোঁয়ায় ঘেন্না!
শুধুই ছোঁয়া? না কি নাকি মাংস চিবিয়ে খাওয়া!
কালশিটে দাগগুলো কোমলতা খোঁজে!
সূর্যে-চন্দ্রে অবিশ্বাস! কেন ওঠে!
আলো? সে কি দিতে পারে?
মুখ লুকাও,লুকাও মুখ...মেঘের চাদরে!
কি জানি কোথায় আবার জ্বলে আগুন,পোড়ে খই! অগ্নিসাক্ষী!
সাত জনমের অগ্নিপরীক্ষা?
সুর ভেসে আসে কানে...মন্ত্রের!
"যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম"
"বকুল-প্রিয়া","বকুল-প্রিয়া"... একই নামে কেটে গেছে সতেরোটা বছর! আনকোরা বইয়ের পাতার গন্ধ যেন আজও ওই নামে! স্পর্শকাতর প্রেম অবনীর!
ঠিক যেন একজোড়া শালিক,বারান্দায়-উঠোনে-ছাদে-পুকুর ঘাটে! বসন্ত বাহারে,শরতের কাশে,পূর্ণিমা'র চাঁদে কিংবা সূর্যের গ্রহণে দুই প্রাণ মিলে একাকার!
একটু ছুঁয়ে যাওয়া হাত,বিদ্যুৎ ঝলকানি সম-দুঃখ ফেরায় মুখ! ইতিহাস শোনায় প্রেম! কিন্তু ওরা তো ইতিহাস নয়-জানে মিত্তির বাড়ীর অলিগলি!
সবার অলক্ষ্যে বহুবার কথা বলে চার চোখ! খিলখিল হাসির জলতরঙ্গে বেহাল হয় অবনী,তবু আরও প্রেম চাই!
মিত্তির বাড়ীর বারান্দাটা দেখেছে বহু,চারপুরুষের গল্প জানে! সেরা গল্প-অবনী-প্রিয়ার প্রেম! আজ শব যাত্রায় প্রিয়াকে বিদায় দিলো হাসি মুখে-" ভালোবাসি ভালোবাসি"..রবি ঠাকুরের সুরে!
অন্তরমহল খালি? না তো! প্রিয়া আজও জুড়ে আছে সবটুকু!

দখিনখোলা একফালি অলিন্দ টা,
নাম 'ত্রয়ী'..মেজ বৌয়ের দেওয়া নামখানি। মিত্তির বাড়ির বহু ইতিহাস মনে পড়ে ওর।
উঠোনের মাঝখানে তুলসী তলায় শোয়ানো দেহ! বড়দার 'বকুল-প্রিয়া'..ওদের সবার বড়দি! তিন জা' তিন 'সই'!
অলিন্দ জানে কোনও ঘর ভালোবাসা,কোনও ঘর স্বপ্নের আবার কোনওটা ঠাসা কালশিটে অভিমানে,লাম্পট্যে!
ছোটটি ডুকরে কাঁদে,মেঝটি একমনে আকাশ দেখে...হ্যাঁ ওইখানেই তো বড়দি গেছে! বহুদূরে! রোজ দেখা যাবে হয়তো শঙ্খচিলের ঝাঁকে কিংবা বহু ভিন দেশী তারাদের মাঝে!
অলিন্দ দেখে সব,আরও দেখা বাকি! নির্বাক,নিশ্চুপ সে....,নাম-'ত্রয়ী'!

কবিতা





দেবাশীষ মণ্ডল
              খড়গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর                        





থুতু  

চুল অনিয়ন্ত্রিত প্রকৃতি
শরীরে নেই সাজানো সভ্যতা
লোকালয়ে শিরায় শিরায় বিষে
বুটের নিচে থেঁতলে গেছে মুখ
পাগল পাগল চিৎকারে
প্রতিটি হাড় ভেঙে দেবার পর
প্রবল ঘৃনায় একদলা থুতু,
ওরা যে যার ঘরে ফিরেছিল.....

ক্রমান্বয়ী ভাষার আবেষ্টন
কখনও বোঝেনি গভীর অসুখ ।






কবিতা






অরুণিমা চৌধুরী
             ব্যারাকপুর, কোলকাতা




সম্পর্ক-১

সম্পর্কের মৃতচরে বিস্মৃতির পলি জমে..
       লতাজাল, ঘাসপাতা আরো কিছু জঞ্জালকণা...
         তারপর একদিন সব ভেসে যায়..
              কোথাও কোন চিহ্ন  থাকেনা।
                পথেপথে বোকা মন একা হেঁটে যায়।




আয়েসী লাহিড়ী
                               কোলকাতা




            তুমি

চোখ কোথায় ? দুটো চোখ
যাতে উপচে পরে ভালোবাসা
চোখ আলো করা আশা।
চোখ আয়ত  গভীর
আমার ছবি আকা।
অনন্ত বাসনা,পুঞ্জিত অভিমান।।
চোখের কোনায়ে ঝিলিক হাসি।
কোথায়ে চোখের ছোঁয়া
কেন সুধু চোখের পরে
কিলবিলে কালো অক্ষর
আর প্রাণহীন  ছবি।
চোখ কথায়ে তোমার?
সেই চোখ
সজল প্রেম মাখা ।





দেবাশীষ কোণার
                                    বর্ধমান




লাগামছাড়া

অসংখ্য যে বাক্যবাণে মৃত্যু তুফান ছুট
সহ্য করা সহজ সে কি দুরন্ত অদ্ভুত
নরক যেথা গুলজার আর স্বর্গ কলঙ্কিত
বোধের ঘরে মূর্খ থাকে চির অপরিচিত
বিশ্বাস যার মুখ লুকিয়ে আড়াল খোঁজে দ্রুত
প্রভুর কাছে ভিক্ষা মাগে আবেগে আপ্লুত
হন্যে হয়ে খুঁজবি যখন নিজের বাগানখানা
দেখবি নিজেই হারিয়ে গেছিস যেন রে রাতকানা
কষ্ট করে কেষ্ট মেলে খাদ্য মেলে কই
তন্ছটে প্রাণ ওষ্ঠাগত রাতপাহাড়ার হই
জড়িয়ে আছো লতায় পাতায় ভুলে যে যায় মন
লাগামছাড়া অত্যাচারেই মুক্তি অনুক্ষণ ।